×
ব্রেকিং নিউজ :
সিরাজগঞ্জের উল্লাপড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ভ্যান চালক নিহত রাজস্ব আয় বাড়াতে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন জরুরি শেরপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী গোপালগঞ্জের জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উদযাপিত কুড়িগ্রামে আইনগত সহায়তা দিবস ও লিগ্যাল এইড মেলা অনুষ্ঠিত জমজ শিশুর অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক থেকে আগামীকাল দেশে ফিরবেন শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে : স্পিকার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০৮-১৫
  • ৫৬৭৬৯ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে চট্টগ্রামের মানুষ। মঙ্গলবার ভোর হতেই ফুল হাতে কালো রঙের ব্যানার নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতির কাছে অশ্রুসিক্ত নয়নে ছুটে যান চট্টগ্রামের হাজার হাজার মুজিব প্রেমিক। সকালের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় বিভাগীয় কমিশনারের পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে। পরে একে একে সমাজের বিশিষ্ট ও সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন করা হয়। নগর ও উপজেলা জুড়ে মাইকে প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও দেশাত্মবোধক গান। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আয়োজন করে প্রার্থনার। 
দিনের শুরুতে সকাল সাড়ে ৯টায় বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি চৌকস দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়।
দিবসটি উদযাপনে জেলা শিল্পকলা চত্বরে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষ্যে শিল্পকলার জয়নুল আবেদীন আর্ট গ্যালারিতে চট্টগ্রাম পিআইডি’র পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবন ও কমের্র উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন। বাদ জোহর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের  উপর নির্মিত নাটক প্রদর্শন করা হয় শিল্পকলা একাডেমিতে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, রেঞ্জ ডিআইজি নুরে আলম মিনা, পুলিশ সুপার পুলিশ এস এম শফিউল্লাহ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, জেলা ইউনিট কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) এ. কে. এম সরোয়ার কামাল বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম বলেন, জাতির পিতাকে আমরা হারিয়েছি, কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো বেঁচে আছেন। শোককে শক্তিতে পরিণত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে। ২০০৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এ গতি যদি অব্যাহত থাকে তবে আমরা মনে প্রাণে বিশ^াস করি ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট রাষ্ট্র্রে পরিণত করতে পারবো। 
আলোচনা সভায় বক্তারা স্বাধীনতা বিরোধী ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত বা সুবিধাভোগীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার, সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়ন অক্ষুন্ন রাখার জন্য প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে চিত্রাঙ্কন এবং রচনা প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শোকাবহ সংগীত পরিবেশন করে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন: নগরীর টাইগারপাসস্থ কার্যালয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কনফারেন্স রুমে খতমে কোরআন ও বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এরপর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করলেও যড়যন্ত্রকারীদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। জাতির পিতার লড়াই ছিল দেশ স্বাধীন করার লড়াই ৷ বঙ্গবন্ধুর লড়াই ছিল ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লড়াই। ওরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করতে পেরেছে কিন্তু জাতি ঠিকই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোলমডেল। 
এসময় মেয়র দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। এবছর প্রথমবারের মতো ৪১টি ওয়ার্ডের ২০ জন করে মোট ৮২০ জন শিক্ষার্থীকে চসিকের পক্ষ থেকে অনুদান দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন মেয়র। এছাড়া অনুষ্ঠানে চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন মেয়র। এর আগে শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর সদরঘাটের চসিক মেমন মাতৃসদন হাসপাতালে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মেয়র। 
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)’র উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সিইউজে কার্যালয়ে সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। এরআগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে এখনো সক্রিয় পনের আগস্টের হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্রকারীরা। পৃথিবীর ইতিহাসে ন্যক্কারজনক এ হত্যাকা-ে জড়িত দেশি-বিদেশি চক্রান্তের স্বরূপ উন্মোচনে কমিশন গঠনের পাশাপাশি সব খুনির ফাঁসি কার্যকর না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। এর জন্য দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিকের মতো জাতির বিবেক খ্যাত সাংবাদিকদেরও সজাগ, সতর্ক থাকতে হবে। জনমত গঠনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে গণমাধ্যমকর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।  
বাংলাদেশ চা বোর্ড : বাংলাদেশ চা বোর্ডে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার দিবসটি উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে চট্টগ্রামে চা বোর্ড প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন, জাতির পিতার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, আলোচনা সভা, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। বোর্ডের উপ-সচিব মোহাম্মাদ রুহুল আমীনের সঞ্চালনায় জাতির পিতার জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। অনুষ্ঠানে বোর্ডের সদস্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মো. কামরুল আমিন, সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরীসহ বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat