×
ব্রেকিং নিউজ :
স্মার্ট চট্টগ্রাম সিটি গড়তে আমেরিকান প্রতিষ্ঠানের সাথে চসিকের সমঝোতা ঝিনাইদহে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু জাতির পিতার সমাধিতে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা শরীয়তপুরে প্রত্যাগত অভিবাসীদের পুনঃ একত্রিকরণ শীর্ষক সেমিনার টাঙ্গাইলে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলো জমজ দুইবোন বাংলাদেশের এমএসএমই, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ঘোষণা যুক্তরাজ্যের স্পিকারের নেতৃত্বে আজ জেনেভা যাচ্ছে সংসদীয় প্রতিনিধিদল ডোনাল্ড ল্যু নিজ দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আলোচনা করতে এসেছেন: ওবায়দুল কাদের আন্তর্জাতিক ইসরায়েলি লবির সাথে যুক্ত হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী হজযাত্রীদের নিকট হতে কুরবানির টাকা নেয়ায় মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা
  • প্রকাশিত : ২০২০-০১-৩০
  • ৩৮০ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
অহেতুক চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অহেতুক চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে তাঁদের মেধা ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহবান জানিয়ে বলেছেন, সরকার চায় এই মুজিব বর্ষে দেশে কেউ বেকার থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র চাকরির মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকলে চলবে না। তরুণদের মাঝে যে সুপ্ত শক্তি রয়েছে-একটা কিছু তৈরী করার, তাঁর চিন্তা এবং মননকে বিকশিত করার, সেই কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে।
‘নিজে কাজ করবে এবং আরো দশ জনকে কাজের সুযোগ করে দেবে, ’যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি এই বক্তব্যেই আমরা বিশ্বাস করি। কাজেই সেই লক্ষ্য নিয়েই যুব সমাজকে আরো কর্মক্ষম করে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে (পিএমও) জাতীয় যুব পুরস্কার ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।তিনি অনুষ্ঠানে ২২ জন আত্মকর্মী এবং পাঁচ যুব সংগঠনের মাঝে এই পদক প্রদান করেন। ১৯৮৬ সাল থেকে প্রদান করা এ পুরস্কারে এ পর্যন্ত ৪৪৫ জন আত্মকর্মী সম্মানীত হয়েছেন।শেখ হাসিনা তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘চাকরি না করে চাকরি দেব বা দিতে পারবো। সেই সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। সেই চিন্তাটা মাথায় থাকতে হবে এবং আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। আত্মমর্যাদাবোধ থাকতে হবে।’সেটা থাকলে আমারতো মনে হয় বাংলাদেশে আর কেউ বেকার থাকবে না, ’যোগ করেন তিনি।তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা লক্ষ্য হচ্ছে যে, এই মুজিব বর্ষকে ঘিরে বাংলাদেশে আর কেউ যেন বেকার না থাকে।’তিনি দু’টি ঘটনার উদাহারণ টেনে চাকরি না করলেই কাউকে বেকার ভাবার মন মানসিকতাও পরিবর্তনের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।তিনি বলেন, ‘আমাদের এই মানসিকতাটা বদলাতে হবে। কারণ, আমাদের দেশের মানুষের মাথার মধ্যে ঐ একটা জিনিস ঢুকে আছে, চাকরি ছাড়া যেন আর কিছুই করা যায় না। অথচ ফ্রিলান্সিং কাজ করে মাসে ২ থেকে ৩ লাখ পর্যন্ত টাকা আয় করা যায়।’‘লার্নিং এন্ড আর্নিং’ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রয়োজনে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে এক একজন স্বাবলম্বী হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনলাইনে কাজ করেই এখন ঘরে বসেই মানুষ অনেক টাকা রোজগার করতে পারছে।’যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন স্বাগত বক্তৃতা করেন। যুব ও ক্রীড়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আখতারুজ্জামান খান কবির মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে আত্মকর্মী হিসেবে দেশে প্রথম স্থান অধিকারকারী ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান এবং দেশের সেরা যুব সংগঠক (মহিলা) হিসেবে পুরস্কার লাভকারী পারভীন আক্তার নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।জয়পুর হাটের কালাই উপজেলার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আতিক যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে হাঁস-মুরগী এবং গবাদি পশু প্রতিপালনের প্রশিক্ষণ এবং স্বল্পমূল্যেও ঋণ নিয়ে এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ গড়ে তুলেছেন। যার প্রতিষ্ঠানের বর্তমান মূলধনের পরিমান ৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং বার্ষিক আয় এক কোটি ৫৮ লাখ টাকা।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের যুব সমাজ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। আমরা বিজয়ী জাতি। আর বিজয়ী জাতি হিসেবেই আমরা বিশ্বে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, আমাদের যুব সমাজ আত্মনির্ভরশীল হোক, আত্মমর্যাদাশীল হোক। তিনি বলেন, সে লক্ষ্য নিয়ে যখনই সরকার গঠন করেছি তখনই আমাদের যুব সমাজের জন্য আমরা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজ খেলাধূলা, সংস্কৃতি চর্চাসহ সর্বক্ষেত্রেই যেন পারদর্শী হয়ে ওঠে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি এবং নিচ্ছি।যুবকদের প্রশিক্ষণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই প্রশিক্ষণটা একেবারে স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করতে চাই। সেলক্ষে ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকেই যেকোন একটা বিষয়ে হাতেকলমে শিক্ষা দেয়া শুরু হবে।সরকার প্রধান বলেন, যুবকদের প্রশিক্ষণ কেবল যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকেই নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকেও এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তাঁর সরকার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করেছে, সারাদেশে ২৮ শ’ ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছে, সারাদেশের সকল ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করছে, এর সবই যুবকদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই। আর একারণেই বেসরকারী খাতকেও উন্মুক্ত করা হয়েছে।তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত আমরা ২ কোটি যুব সমাজের চাকরি এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি।’স্টার্টআপ’ প্রোগামের (কাজটি শুরু করার জন্য) জন্য সরকার ১শ’ কোটি টাকা ‘থোক বরাদ্দ’ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে উদ্যোক্তা হবে তারাই এখান থেকে ঋণ পাবে। কাজ করতে পারবে এবং শুরু করলেই কিন্তু ব্যাপকভাবে কাজ করা যায়।’তিনি বলেন, তাঁর সরকার সারাদেশে যে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। সেখানে যেমন খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলা হবে তেমনি উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের সুবিধাও রাখা হবে। যেখানে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে আমি এটাই বলবো-যে বহুমুখী সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’তিনি বলেন, ‘আগে দেখতে হবে আমি নিজে কি করতে পারি। নিজে কতটুকু কাজ করতে পারি। আর নিজে মানুষকে কিছু দিতে পারি কিনা সেটাই বড় কথা। আর এক্ষেত্রে যা দরকার সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সে ব্যবস্থা নিচ্ছি, দিচ্ছি এবং সেই সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দেব।’‘আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী ’উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি স্বপ্রণোদিত পদক্ষেপ নিলেই অনেক বড় বড় কাজ তাঁরা করতে পারে। সে বিশ্বাস আমার আছে।’সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মাদক ও দুর্নীতির প্রতি তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক এবং দুর্নীতির থেকে দূরে থাকতে হবে এবং এটা প্রতিহত করতে হবে। একটা শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যাতে মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে এবং দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।তিনি জাতির পিতার আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, জাতির পিতা তাঁর ছাত্রজীবন থেকে এদেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। এই দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়গুলো তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর আদর্শ রয়েছে। তাঁর সেই আরাধ্য কাজ সম্পন্ন করাটাই আমাদের লক্ষ্য। আর যে দেশের জন্য লাখো মানুষ রক্ত দিয়েছেন, সেই দেশ কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা এই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। আর আজকের তরুণ সমাজই হবে সেই গড়ে তোলার কর্ণধার।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat