ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের সাথে করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার।আজ রোববার মহাখালীস্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে বেক্সিমকো ফার্মার মাধ্যমে আগামী ছয় মাসে (প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে) মোট তিন কোটি ভ্যাক্সিন আমদানি করবে।
চুক্তিতে সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ও বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন এমপি স্বাক্ষর করেন।
স্বাক্ষরিত চুক্তিটি ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের দায়িত্বশীল অথরিটির নিকট পাঠিয়ে দেয়া হয়। ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের অথরিটি চুক্তিপত্রটিতে স্বাক্ষর করে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই পুনরায় দেশে পাঠিয়ে দেবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে যে ভ্যাক্সিন সরকার নিচ্ছে সেটি হচ্ছে অক্সফোর্ডের এস্ট্রেজেনেকা ভ্যাকসিন। এই ভ্যাক্সিন বিভিন্ন দেশের ট্রায়ালে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে হয়েছে এবং এই ভ্যাক্সিন আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী। প্রথম পর্যায়ে তিন কোটি ভ্যাক্সিন আমদানি করা হচ্ছে। ধাপে ধাপে এই ভ্যাক্সিন আগামী ছয় মাস দেশে আনা হবে।
তিনি বলেন, এস্ট্রেজেনেকা ভ্যাকসিনের পাশাপাশি আরও কিছু কোম্পানির সাথেও সরকারের আলোচনা চলমান রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি এস্ট্রেজেনেকা ভ্যাক্সিনটি দেশে চলে আসবে। এর মধ্যে অন্য ভ্যাক্সিনগুলোও আমদানি করার কাজ অগ্রগামী হবে।
দ্রুত ভ্যাক্সিন ক্রয়ে অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এদিকে বেলা ১২ টায় রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বলরুমে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় গাইডলাইন সমুহের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং হাসপাতালে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতের অবদানের কথা তুলে ধরে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের স্বাস্থ্যখাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করেছে। স্বাস্থ্যখাত কোভিডকে ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে বলেই দেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অবস্থায় আছে। এই মহামারি চলাকালীনও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করে আবারও দেশের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে বাংলাদেশ। সবই সম্ভব হয়েছে কোভিড নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায়।
গত ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ, দেশের বেক্সিমকো ফার্মা ও ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সেই সমঝোতা চুক্তির প্রেক্ষিতেই আজকের চুক্তিটি সম্পাদিত হলো।