তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে অপশক্তি স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে, সেই বিএনপি-জামাতচক্র এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না, এর একটি ফয়সালা হওয়া প্রয়োজন।
রোববার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের জীবনের স্বর্ণালী সময়ে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে অস্ত্র হাতে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলেন দেশমাতৃকাকে মুক্ত করার জন্য, এজন্য আপনাদেরকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি প্রধান আলোচক হিসেবে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপুসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শরীফ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘জিয়ার লাশ নিয়ে কথা বলে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়া হচ্ছে’ এর জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জনগণ মনে করে এবং দলিল বলে আপনারাই প্রতারণাটা করেছেন। আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের মেয়ের জামাই রাঙ্গুনিয়ার তৎকালীন চেয়ারম্যান জহির এবং বর্তমান চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন দু’জনই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াতে জিয়াউর রহমানের কথিত লাশ দাফনের প্রত্যক্ষদর্শী। তারাও বলেছেন যে তারা কোনো লাশ দেখেননি।’
‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর এটি সমগ্র বাংলাদেশে প্রচার করা হয় এবং চট্টগ্রামে তৎকালীন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা রেডিওতে বারবার প্রচার করতে থাকেন’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের কর্মচারি নূরুল হক ২৬ মার্চ গোলাগুলির মধ্যে সারাদিন চট্টগ্রাম শহরে জীবন বাজি রেখে রিক্সায় করে স্বাধীনতার ঘোষণা মাইকিং করেন। ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমানকে ধরে এনে ঘোষণা পাঠ করতে দেয়া হলে প্রথমে ভুল করেন ও পরে শুদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর নামে ঘোষণাটি পাঠ করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অপচেষ্টা চালানো হয় এবং স্বাধীনতার খলনায়কদেরকে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়। আপনারা কেউ জিয়া কিম্বা অন্য কারো আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে যান নাই, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সবাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছেন। জিয়াউর রহমান নামে একজন মানুষ আছে সেটি কেউ জানতোই না।’
এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের মাধ্যমে দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠার কাজকে পূর্ণাঙ্গ করা সম্ভব হবে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তার সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাই ফ্লো অক্সিজেন সিস্টেম, মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মাছের পোনা অবমুক্তি এবং পল্লী উন্নয়ন কর্মসুচির আওতায় ঋণ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই আজ গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য ঘুচে গেছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুসের সভাপতিত্বে উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেব প্রসাদ, রাঙ্গুনিয়ার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাই ফ্লো অক্সিজেন সিস্টেম দানকারী তথ্যমন্ত্রীর পারিবারিক দাতব্য সংস্থা এনএনকে ফাউন্ডেশনের পরিচালক খালেদ মাহমুদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।