×
ব্রেকিং নিউজ :
দেশের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ৬৪ জেলার স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি উল্লাপাড়ায় জামাত নেতার সাথে ছবি ভাইরালের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন দিনাজপুরে নাশকতার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৩০ নেতাকর্মী জেলহাজতে কুমিল্লায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন রাঙ্গামাটিতে প্রাণি সম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন স্কাউটিংয়ের মূল দর্শন, কর্মসূচি ও কার্যক্রমগুলোতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের আহবান শিক্ষামন্ত্রীর বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদপত্র বিতরণ প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
  • প্রকাশিত : ২০২১-০৯-১৪
  • ৭৩৮ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার নিজ পরিবারের বড়ভাই, ভাবী, ভাতিজা ও ভাতিজিকে হত্যার দায়ে রায়হানুর রহমানকে দোষী সাব্যবস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক জনাকীর্ণ আদালতে এ আদেশ দেন। একই আদেশে আসামিকে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিলের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে।
ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম রায়হানুর রহমান(৩৬) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের প্রয়াত ডা. শাহাজাহান আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের বড় ছেলে শাহীনুর রহমান আট বিঘা জমিতে পাঙ্গাস মাছ চাষ করতেন। মেঝ ছেলে আশরাফ আলী মালয়েশিয়ায় থাকেন। ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান ছিল বেকার। বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে তিনি খাওয়া দাওয়া করতেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি রায়হানুর রহমানকে তালাক দিয়ে স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যায়। সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মধ্যে গালমন্দ করতেন। এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই মো. শাহীনুর রহমান(৪০) ভাবী সাবিনা খাতুন(৩০), তাদের ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী(১০) ও মেয়ে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে(৮) কোমল পানীয়র সঙ্গে বিশেষ চেতনানাশক বড়ি খাওয়ায় রায়হানুল। পরদিন ১৫ অক্টোবর ভোর চারটার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। হত্যাকারী ওই পরিবারের চার মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়।  এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদি হয়ে কারও নাম উলে¬খ না করে থানায় ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত শাখার (সিআইডি) সাতক্ষীরা অফিসের পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট  বিলাস মন্ডের কাছে একাই হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। একই দিনে অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের(সিআইডি) খুলনা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক শেখ ওমর ফারুক তার সাতক্ষীরা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলন করে হত্যার মোটিভ সম্পর্কে ব্যাখ্যা  দেন।  তদন্তভার নেয়ার এক মাস আট দিন পর ২৮ জনের সাক্ষী ও রায়হানুলের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা  রায়হানুর রহমানকে একমাত্র আসামি করে ৩২৮ ও ৩০২ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রাজ্জাক দালাল আব্দুল মালেক ও আসাদু সরদারকে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। গত ১৪ জানুয়ারি আসামী, রায়হানুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠণ করা হয়। মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার ১৭ জন সাক্ষী ও আসামিপক্ষে একজন সাফাই সাক্ষী দেন। নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে। ২২ আগস্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে প্রথমে ২৯ আগস্ট ও পরে পহেলা সেপ্টেম্বর রায় এর জন্য দিন ধার্য  করা হয়। পরবর্তীতে রায়ের দিন আর এক দফা পিছিয়ে আজ ১৪ সেপ্টেম্বর ধার্য করে আদালত।
মামলার ১৮জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামি রায়হানুর রহমানের বিরুদ্ধে চারজনকে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন। এদিকে মামলার রায় শোনার পর রায়হানুর আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ রায় চাঞ্চল্যকরা এ মামলার রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকান্ডের ১১ মাস পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ মামলার যে রায় হয়েছে তাতে আগামিতে কোন ব্যক্তি যাতে এ ধরণের নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটাতে সাহস না পায় তার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। উচ্চ আদালতেও এ রায় বহাল থাকবে বলে তিনি আশাবাদী।
আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. এসএম হায়দার আলী বলেন, মামলার পূর্ণাঙ্গ আদেশ পাওয়ার পর পর্যালোচনা শেষে এ রায় এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat