×
ব্রেকিং নিউজ :
হবিগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্ব অপরিহার্য : রাশেদ খাঁন ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বগুড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব পটুয়াখালীতে এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন উৎসবে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০৪-২১
  • ৩৪৪৪৪৫৭৫৩ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
শ্রম অধিকার শক্তিশালী করার মাধ্যমেই বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাকর ও শক্তিশালী দেশ হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব বলে মনে করে শ্রম সংস্কার কমিশন।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর বিজয় নগরে শ্রম ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান আহম্মদ।

এর আগে দুপুর ১২ টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। 

অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিআইএলএস) এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করে।

সৈয়দ সুলতান আহম্মদ বলেন, ‘শ্রম সংস্কার কমিশন বিশ্বাস করে, শ্রমখাতে সংস্কার সামগ্রিকভাবে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে একটি অত্যাবশ্যক উপাদান। ৮ কোটি শ্রমজীবী মানুষের জীবনমানের ন্যায্য রুপান্তর এই প্রতিবেদনে উপস্থাপিত রূপরেখা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই অর্জিত হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি, শ্রম অধিকার শক্তিশালী করার মাধ্যমেই ছোট্ট বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাকর ও শক্তিশালী দেশ হিসেবে উপস্থাপন করা সম্ভব।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ সমূহের মধ্যে সামগ্রিক দিক উপর্যুক্ত ২৫ টি মূল সুপারিশে প্রতিফলিত ও গুরুত্বারোপ হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম সকল শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি, মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় এবং খাতভিত্তিক মজুরি নিশ্চিত করণ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করণ, শ্রমিকসহ শ্রমশক্তি নিবন্ধন ব্যবস্থা ও তথ্যভান্ডার গঠন;  সংগঠন, দরকষাকষির অধিকার; জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা; স্থায়ী শ্রম কমিশন গঠন; কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ;সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা; সম-অধিকার নিশ্চিত, সহিংসতা ও বৈষম্য দূরীকরণ; যৌন হয়রানিসহ সকল ধরনের হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধ; সার্বজনীন মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা; শিশু-কিশোর ও জবরদস্তিমূলক শ্রম বন্ধ ও নিরাপত্তা; সুসমন্বিত শিল্প সম্পর্ক ও সামাজিক সংলাপ চর্চা; সুষ্ঠু শ্রম আদালত, ন্যায় বিচার ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা; মর্যাদাপূর্ণ-হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ ও আদালতে বাংলা ভাষার প্রচলন করা; সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রতিনিধিত্বে নারী-পুরুষ শ্রমিকের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা;আপদকালীন তহবিল গঠন ও বিদ্যমান তহবিলের স্বচ্ছতা; শ্রমিক ইতিহাস-ঐতিহাসিক স্থান সুরক্ষা ও স্মৃতিসৌধ গঠন; শহিদ স্বীকৃতি, পুনর্বাসন,চিকিৎসা ও ন্যায় বিচার; টেকসই শিল্পায়ন, উৎপাদনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন; শিল্পাঞ্চল ও শ্রমঘন এলাকায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা; জলবায়ু ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিবেচনায় কর্মপরিবেশ গঠন; অভিবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত এবং শ্রমবিষয়ক  গবেষণা ও জরীপ করা।

সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ২৪ জুলাইয়ের রক্তঝরা শ্রমিক-শিক্ষার্থী-জনতার গণ-আন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক মর্যাদাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা। এই জনআকাঙ্ক্ষা ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার শ্রমিক অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে ‘শ্রম সংস্কার কমিশন’ গঠন করেন। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ইতিহাসে প্রথমবার গঠিত এই কমিশন মনে করে, বাংলাদেশের শ্রম জগতে বিরাজমান বৈষম্য মোকাবেলার জন্য শ্রম, শ্রমিক ও তাদের অধিকারকে কেন্দ্রীয় গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।

শ্রমজীবীর নাগরিক অধিকার, জীবন-জীবিকার মর্যাদা, সম-অধিকার, প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন ও বৈষম্য বিরোধী সুযোগ নিশ্চিতের লক্ষ্যে শতাধিক অংশীজনের সাথে মত বিনিময়ে সমন্বিত হয়েছে এই সুপারিশ করেছে বলেও জানান শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান।  

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকের অধিকার ও মঙ্গল নিশ্চিতকরণে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে কর্মসংস্থান, শিল্পের উৎপাদনশীলতা-বিকাশ এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সাথে। তাই এটি শুধু শ্রমিকের নয় সমগ্র দেশ ও দশের স্বার্থেই জরুরি। 

শ্রমিকের অধিকার বাংলাদেশের সাংবিধানিক অধিকারের অংশ। তেমনি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে শ্রমমানের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এ দেশের অঙ্গীকারের অংশ। এর জন্য রাষ্ট্রের নীতি-আইন প্রণয়ন, পরিকল্পনা গ্রহণ-বাস্তবায়ন, সর্বজনীনতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির অনুসরণ অন্যতম প্রয়োজনীয় কাজ। লক্ষ্যভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির মাধ্যমে শ্রমিকের অধিকার, শিল্প বিকাশ ও উন্নয়নের সুফলে শ্রমিকের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিতের মাধ্যমেই বৈষম্যহীন-মর্যাদাকর বাংলাদেশ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে কমিশন অভিমত প্রকাশ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat