দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার ভয়াবহতা নিয়ে আর কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। এ নিয়ে আজ শুধু উদ্বেগ প্রকাশের সময় উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এখন প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়ে কাজ করা। রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্যোগী ভূমিকা, সমাজ শক্তির এগিয়ে আসা দরকার। দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে সবার আপসহীন হওয়া ভিন্ন এদের দৌরাত্ম্য যে মাত্রায় পৌঁছেছে তা রোধ করা সম্ভব হবে না। এই সমাজবিরোধী শক্তি আইন-কানুন ও প্রশাসনকে ধর্তব্যে নিচ্ছে না। সাধারণ মানুষের জীবন সম্পদ রক্ষায় কোথায় ঠাঁই মিলবে সে চিন্তায় দিশেহারা। মানুষের অসহায়ত্ব প্রমাণ করে, প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা দিতে অক্ষম। এই ব্যর্থতার দায় রাষ্ট্রের নির্বাহীদের নিতে হবে।
এখন যারা সমাজে ভীতি অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, অনুসন্ধানে দেখা যাবে যে এদের পেছনে শক্তিধর মদদগার রয়েছে। এ মদদগারদের পেটুয়া হিসেবে ওই দুর্বৃত্তরা ব্যবহৃত হয় বলে তারা তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থেকে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য বরাবর হুমকি হিসেবে বিরাজ করে। অথচ সমাজের নেতাদের অন্যতম দায়িত্ব সমাজে বসবাসকারী মানুষের নিরাপদে জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দেয়া। সে নিশ্চয়তা এখন কোথায়? আর সমাজজীবনের এমন অবক্ষয়ের কারণে কিছু দিন আগে দুঃখী মানুষের আবাসস্থল হিসেবে বাংলাদেশকে চিহ্নিত করা হয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষায়। ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ দেশের মানুষের সুখ-শান্তির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। যেখানে জীবনের নিরাপত্তা কমতে থাকে, সেখানে মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারে কিভাবে? সমাজের যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে মনে হয় ভীতি সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীরাই জয়ী হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের এমন অপ্রতিরুদ্ধতা দেশের শাসনব্যবস্থা নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে। জনগণ তাদের করের পয়সা ব্যয় করে থাকে সমাজের শান্তিশৃঙ্খলার জন্য, কিন্তু তার হাল এখন কোন অবস্থায়?