×
ব্রেকিং নিউজ :
স্মার্ট চট্টগ্রাম সিটি গড়তে আমেরিকান প্রতিষ্ঠানের সাথে চসিকের সমঝোতা ঝিনাইদহে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু জাতির পিতার সমাধিতে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা শরীয়তপুরে প্রত্যাগত অভিবাসীদের পুনঃ একত্রিকরণ শীর্ষক সেমিনার টাঙ্গাইলে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলো জমজ দুইবোন বাংলাদেশের এমএসএমই, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ঘোষণা যুক্তরাজ্যের স্পিকারের নেতৃত্বে আজ জেনেভা যাচ্ছে সংসদীয় প্রতিনিধিদল ডোনাল্ড ল্যু নিজ দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আলোচনা করতে এসেছেন: ওবায়দুল কাদের আন্তর্জাতিক ইসরায়েলি লবির সাথে যুক্ত হয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী হজযাত্রীদের নিকট হতে কুরবানির টাকা নেয়ায় মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা
  • প্রকাশিত : ২০২২-০১-২৯
  • ৪৭২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। তবে অনানুষ্ঠানিক খাতের যেসব জায়গায় এ সুবিধা দরকার ছিলো তার অনেক ক্ষেত্রেই পৌছায়নি। এর অন্যতম কারণ প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা। ফলে সংকট মোকাবেলার উদ্যোগ কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে সংস্কার আনা দরকার। প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা বেশি পেয়েছে সংগঠিত ব্যবসায় গোষ্ঠী।
শনিবার ‘কোভিড-১৯ প্রণোদনা প্যাকেজ : প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’ বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিমত ব্যাক্ত করেছেন। দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন, ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও গবেষণা সংস্থা র‌্যাপিড যৌথভাবে অনলাইনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ  মান্নান।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমিত রোগী সনাক্ত হয়। এরপরে সরকার ২৫ মার্চ রপ্তানি খাতের কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য মাত্র ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৫ হাজার টাকার একটি তহবিল ঘোষণা করে। করোনার প্রভাব মোকাবেলায় বিভিন্ন খাতের জন্য পর্যায়ক্রমে ২৮টি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এসব প্যাকেজে এক লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা জড়িত, যা দেশের মোট দেশজ আয়ের (জিডিপি) প্রায় ৬ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ঘোষিত প্যাকেজের ৮৫ ভাগ ব্যাংক ঋণ নির্ভর। এই প্যাকেজগুলো অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কতটা ভুমিকা রেখেছে, সরকারের এই উদ্যোগের ভুমিকা আরও প্রসারিত করার ক্ষেত্রে কী করা যেতে পারে, যেসব প্রতিষ্ঠান এসব কার্যক্রমে সম্পৃক্ত তাদের ভূমিকা আরও কার্যকর করতে কী করা দরকার, কারা সুবিধা পেয়েছে, যারা পাননি তারা কেন পাননি বা তাদের জন্য কী করা যেতে পারে এসবই ছিলো ওয়েবিনারের আলোচনার বিষয়।
এম এ মান্নান বলেন, সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি দূর করতে সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, যেকোনো জরুরি বা সংকটময় পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিরোধ উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ন। করোনার ক্ষেত্রে সরকার সেটাই করেছে। তিনি বলেন, প্রণোদনার সুবিধা কারা পাবে, তা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রথম দিকে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। তবে পরে সেগুলো ঠিক করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী সািঠকভাবে চিহ্নিত করা গেছে। সরকারের মূল লক্ষ্য সমস্যা সমাধান করা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।  তিনি বলেন, সরকারের  প্রণোদনা প্যাকেজগুলো অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির ৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ গত ডিসেম্বরে ২২ তম অবস্থানে ছিল। চলতি জানুয়ারিতে যদিও তা কিছুটা অবনতি হয়ে ২৯ তম হয়েছে। এই অবস্থানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন হচ্ছে সরকারের উদ্যোগগুলো কতটা প্রভাবিত করছে। সেই বিচারে বাংলাদেশ বিশ্বে প্র্রসংশিত হয়েছে। তবে প্রণোদার সুবিধা বেশি পেয়েছে সংগঠিত গোষ্ঠী। বিশেষ করে রপ্তানি খাত। যাদের সরকারের নীতি নির্ধারকদের কাছে সহজে পৌছানোর সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, তুলনামুলকভাবে অনানুষ্ঠানিক খাতের মাঝারি, ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার সুবিধা ঠিকভাবে পায়নি। নীতি সুবিধা কার প্রয়োজন সেটি চিহ্নিত করার কাজটিও ঠিকভাবে হয়নি। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার প্রভাব খুবই ইতিবাচক।
এম এ রাজ্জাক বলেন, সরকারের সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ফলে সবাইকে সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে না। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন যার তাকে সুবিধাটা আগে দিতে হবে। কিন্তু সুবিধাভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রাতিষ্ঠানিক দূর্বলতার কারণে তা হচ্ছে না। এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাকে গুরুত্ব না দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যাবে না। যদি নীতি সুবিধা বন্টনে বৈষম্য দূর করতে হয়, যার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তার কাছে সুবিধা পৌছাতে হয়, তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা মানে কেবল কিছু প্রশিক্ষণ নয়। কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন, নতুন জ্ঞান বা ধারণা অন্তর্ভুক্ত করা এবং জনবল বাড়াতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. কাওসার আহমেদ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। বর্তমানে যেসব সামাজিক নিরাপত্তামুলক কর্মসূচি রয়েছে, সেগুলো যথার্থভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আরও অন্তর্ভূক্তিমুলক করা সরকারের লক্ষ্য।
অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সকলের জন্য পেনশন, কর্মস্থলে দুর্ঘটনার জন্য বীমা ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। প্রণোদনা প্যাকেজ প্রসঙ্গে বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতে যারা সুবিধা পায়নি বা সমস্যায় রয়েছে তাদেরকে সুবিধা দেওয়ার কাজ চলছে।
ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, শুধু সক্ষমতা বাড়ালে হবে না, প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করতে হবে। তিনি বলেন, কার কি সুবিধা দরকার সেটি এসডিজি বিষয়ক লোকালাইজেশন কর্মসূচি থেকে সহজে বের হয়ে আসবে। ফলে এসডিজির তথ্যগুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ মহাব্যবস্থাপক নূরুল আলম বলেন, ঋণ ঝুঁকি মোকাবেলার ব্যবস্থা এখন জরুরি।
এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ বলেন, করোনার কারণে বিশ^ব্যাপি খুবই কঠিন সময় যাচ্ছে। এখন এই মহামারী ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার হচ্ছে। ফলে পুরো বিশে^র আর্থ-সামাজিক খাতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার করোনার প্রভাব মোকাবেলায় যেসব প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়েছে সেটা খুবই সমযোপযোগি ছিলো। যে কারণে আর্থ-সামাজিক খাতে করোনার প্রভাব যতটা আশংকা করা হয়েছিলো, ততটা প্রভাবিত হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এম আবু ইউসূফ বলেন, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর কারণে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সহজ হয়েছে। তবে এই প্যাকেজগুলোকে আরও কার্যকর করা যেতো কিনা বা আগামীতে এ ধরনের সংকট মোকাবেলায় সরকারি উদ্যোগকে কিভাবে আরও কার্যকর করা যায়, কিভাবে আরও সুনির্দিষ্টভাবে প্রাপ্যতা নির্ধিারণ করা যায় সেসব নিয়ে এখন কাজ করা দরকার। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।
ইআরএফ সভাপতি শারীমন রিনভীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে  ইষ্টার্ন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat