×
ব্রেকিং নিউজ :
শিগগিরই মাগুরায় রেললাইন চালু হবে : রেলমন্ত্রী কুকি-চিনের নারী শাখার সমন্বয়কসহ দুইজন বান্দরবানের কারাগারে সুনামগঞ্জে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন রাঙ্গামাটির লংগদুতে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত ২ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি সরকারের ধারাবাহিকতার জন্যই দেশে এতো উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের শুদ্ধাচার নিশ্চিতকরণ ছাড়া এসডিজি অর্জন সম্ভব নয় : চট্টগ্রামে টিআইবি কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যবসা সম্প্রসারণে ইএসজি কমপ্লায়েন্স রিপোটিং স্ট্যান্ডার্ড থাকা জরুরী সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই : বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী
  • প্রকাশিত : ২০২২-০২-২৬
  • ৪৫৩ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের গণটিকা কার্যক্রমে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন ছাড়াই দেওয়া হয়েছে টিকা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)-এর স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিভিল সার্জন (সিএস) অফিস নগরী ও ১৫ উপজেলায় ৩ লাখ ৬৫ হাজার মানুষকে টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। দিনশেষে দেখা যায়, নগরী ও জেলায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।
সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয় এ কার্যক্রম। চলেছে একটানা সন্ধ্যা পর্যন্ত। কয়েকটি কেন্দ্রের লাইনে মানুষ অপেক্ষমাণ থাকায় সন্ধ্যার পরও টিকা দেয়া হয়।
বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, আগ্রহীরা সুন্দরভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকার জন্য অপেক্ষা করেছেন। সরকারের এ বিশাল কর্মযজ্ঞকে সফল করতে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে স্বেচ্ছাসেবকগণ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।
চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় গণটিকা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ডে ৩টি অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে। পৌরসভাগুলোর প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩ টি অস্থায়ী কেন্দ্র স্থাপন করে টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া নির্ধারিত কেন্দ্রের বাইরে প্রতি উপজেলায় ৫ টি এবং জেলায় ২০টি ভ্রাম্যমাণ দল টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। প্রতিটি দলের জন্য ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৩ শ’ জনকে টিকা প্রদান করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রামে সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী সন্ধ্যায় জানান, ‘১৫ উপজেলায় মোট ১ লাখ ৮০ হাজার টিকা প্রদানের টার্গেট রেখেছিলাম আমরা। কিন্তু আমরা যে হিসেব পেয়েছি তাতে আজ মোট ৪ লাখ ২৯ হাজার ২৯৪ জনকে টিকার প্রথম ডোজ দিতে পেরেছি। আজকের দিনসহ উপজেলা পর্যায়ে ইতিমধ্যে ৭১ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।’
সিভিল সার্জন বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকালও এ গণটিকা কার্যক্রম চলবে। এছাড়া আগের নিয়মে প্রতিদিন প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ প্রদানের কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, করোনার প্রকোপ ও এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সাধারণ মানুষের প্রতি আমার আহবান থাকবে, যারা এ গণটিকায় কোনো কারণে বাদ থাকবেন তার যেন দ্রুত কোভিড ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।’
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হয়। এছাড়া স্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে টিকাদান অব্যাহত ছিল। এর বাইরে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অতিরিক্ত ২৫টি ভ্রাম্যমাণ দল কাজ করেছে। প্রতিটি দলে ৫ শ’ জনকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। নগরীতে গড়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৪ হাজার ৫ শ’ টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বড় ওয়ার্ডগুলোতে এ সংখ্যা আরো বেশি। এছাড়া ১২ কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জোনাল মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, ইপিআই কর্মসূচিতে নিযুক্ত সরকারি বেসরকারি স্বায়ত্তশাসিত এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্যকর্মী, সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত সংশ্লিষ্ট ইপিআই টেকনিশিয়ান, সুপারভাইজার, স্বাস্থ্য সহকারী, টিকাদান কর্মী, ও স্বাস্থ্যকর্মীগণ এ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী সকালে নগরীর কাট্টলি ওয়ার্ডের মোস্তফা হাকিম স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি টিকা গ্রহীতাদের সাথে কথা বলেন। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে টিকা দেওয়ার জন্য তিনি এসময় সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পরে তিনি নগরীর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের লালদীঘি পার্কে গণটিকাদান কর্মসূচিতে যোগ দেন।
নগরীতে গণটিকা কার্যক্রমের সাফল্য সম্পর্কে জানাতে গিয়ে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতআর চৌধুরী আজ সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার। কিন্তু ভোর থেকে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে প্রতিটি কেন্দ্রে এবং ভ্রাম্যমাণ স্পটগুলোতে উপচে-পড়া ভিড় হয়ে যায়। স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আমরা ৩ লাখের বেশি মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দিতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে করোনা নির্মূল ও এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা পুরোপুরি সফল হয়েছে। মানুষ সরকারের আহবানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন। নগরীতে আগেই প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় এসেছিল। আজকের গণটিকার ব্যাপক সাফল্যের পর, এ হার ৮০ শতাংশের বেশি হয়ে যাবে।’
আজকের বিশেষ গণটিকা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) সাবিনা ইয়াসমিন ও অতিরিক্ত সচিব (বাজেট) রাশেদা আক্তার গতকাল চট্টগ্রামে এসেছেন। তাঁরা আজ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সাথে বিভিন্ন টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সকালে নগরীর অফিসার্স ক্লাব টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
আজ এ বিশেষ গণটিকা ক্যাম্পেইনে ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব সকল নাগরিককে টিকা প্রদান করা হয়। এছাড়া যারা নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারেননি, তাদেরকেও আজ টিকা প্রদান করা হয়। মোবাইল ফোন নম্বরে টিকা গ্রহীতার তথ্য নথিভূক্ত করে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা ছিল। টিকা দেওয়ার পর গ্রহীতাদের একটি কার্ড দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে টিকা গ্রহণের প্রমাণক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat