×
ব্রেকিং নিউজ :
সিরাজগঞ্জের উল্লাপড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ভ্যান চালক নিহত রাজস্ব আয় বাড়াতে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন জরুরি শেরপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী গোপালগঞ্জের জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উদযাপিত কুড়িগ্রামে আইনগত সহায়তা দিবস ও লিগ্যাল এইড মেলা অনুষ্ঠিত জমজ শিশুর অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকক থেকে আগামীকাল দেশে ফিরবেন শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে : স্পিকার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে
  • প্রকাশিত : ২০২৩-১০-২২
  • ৬৮৮০৪৮ বার পঠিত
  • আলমাহমুদ-ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট-সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের ৩৫নং কয়ড়া রতনদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনসাধারন, অভিভাবকরা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানা জানান, কর্মসূত্রে আমার স্বামী মানিকগঞ্জে থাকার সুবাদে প্রতি সপ্তাহে আমাকে স্বামীর নিকট যেতে হয়। আমার স্বামী কর্মসূত্রে মানিকগঞ্জ থাকার সুবাদে লম্পট শামীম আহমেদ আমাকে নানা রকম কুপ্রস্তাব, অশালীন আচারন করে আসছে। যৌন হয়রানির বিষয়টি আমার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। উল্টো আমাকে শিক্ষা অফিসে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আপোষ করার চেষ্টা করে। এতে আমি অস্বিকার করলে উপস্থিত বিচারকরা আমার চাকরি হারানোর ভয়ভীতি দেখায়। আমি শিক্ষক শামীম আহমেদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয়রা বলছেন, বেশ কিছুদিন আগে শিক্ষক শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিলো। আবার এখন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যদি এভাবেই প্রতিনিয়ন অভিযোগ আসতে থাকে এবং
চরিত্রহীন লম্পট 
 শিক্ষক শামীম আহমেদ এরুপ  অনৈতিক কাজ করতে থাকলে তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানক্ষুন্ন সহ অবিভাবকেরা ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের সন্তানদের পাঠাতে নিরাপত্তাহিনতায় ভূগছে। সেই সাথে 
 শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটছে। আমারা শিক্ষক শামীম আহমেদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসাহি সদস্য আব্দুস সায়েম বলেন, অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানা ইতোমধ্যেই ম্যানেজিং কমিটি বরাবর শিক্ষক শামীমের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। কিছু দিন আগেও সহকারী শিক্ষক শামীমের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রীকে যৌন হয়ারনীর অভিযোগ এসেছিলো। শিক্ষক শামীম নাকি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এবং উপজেলা প্রশাসন তার হাতের মুঠোয় সেই কারণে  বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ভয়ভীতি প্রদান করে আসছেন।   
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানার যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগের এক মাস আগেও বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর এক ছাত্রী শিক্ষক শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিলো। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও এলাকার কিছু গন্যমান্য লোক নিয়ে তার সুষ্ঠ বিচার করে দিয়েছি। এরপরও কিছু কিছু ঘটনার কথা শোনা যায়। সাদিয়া সুলতানার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা একটা তারিখ ধার্য করেছিলাম। কিন্তু সেই তারিখের একদিন পূর্বে শিক্ষক শামিম আহমেদ প্রধানশিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বলেন, আমার বাবা অসুস্থ । আপনার যে ডেট করেছেন সেই ডেটে আমার বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে যাব। তাঁর বাবার অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে আমরা পুনরায় আবার একটা তারিখ নির্ধারন করলেও সে উপস্থিত হয়নি। শিক্ষক শামীম আহমেদ ম্যানেজিং কমিটিকে বার বার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন। 
যৌন হয়রানির বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দিলরুবা পারভীনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন আগে স্কুলে এই অনাকাঙ্খাতি ঘটনা ঘটে। আমি ক্লাস শেষে অফিসরুমে এসে দেখি সহকারী শিক্ষক শামীম ও শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানার মাঝে তর্কাতর্কী চলছে। আমি এসে তাদের বাকবিদন্ডা থামাই। সহকারি শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানা ম্যানেজিং কিমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে একটি নির্দিষ্ট তারিখ ধার্য করলেও  শিক্ষক শামীম উপস্থিত হয়নি।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ছানোয়ার হোসেন স্যারকে অবগত করলে শিক্ষক শামীম ও শিক্ষিকা সাদিয়া সুলতানা সহ অন্য শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষা অফিসে যাই। ছানোয়ার স্যার আলাদা আলাদা ভাবে শিক্ষক শামীম ও শিক্ষিকা সাদিয়ার বক্তব্য শুনে তাদের মধ্যে মিলমিশ করে দেয়।

বিদ্যালয়ে গনমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষক শামীম আহমেদ বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র সরে যায়। প্রধান শিক্ষিকা কয়েকবার শিক্ষক শামীমকে ফোন দিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে বললে আসি, আসছি বলে সময় ক্ষেপন করে কিন্তু বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় নি। এ বিষয়ে শিক্ষক শামীম আহমেদের মুঠো ফনে যোগাযোগ করলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।


এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ছানোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। কিছু টেলিফোনের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জেনে ওই দুই শিক্ষককে আমার অফিসে ডেকে তাদের কথাগুলো শুনি। শিক্ষার বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের মধ্যে সুরোহা করে দেই এবং তাদেরকে সময় দেওয়া হয় যাতে এই বিষয়টির পুনঃরাপত্তি না হয়।
যৌন হয়রারির কোনো অভিযোগ দিলে সেই বিষয়টি মিটানো যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগ আমার কাছে লিখিত আকারে আসেনি। আমি আসলে লেখা পড়া যাতে সুন্দর হয় সেজন্য সেটা করেছি। লিখিত অভিযোগ আসলে সাথে সাথেই তদন্ত কমিটি দিব, তদন্ত কমিটির প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat