×
  • প্রকাশিত : ২০২১-০৩-২৮
  • ৯৪৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুর প্রতি ব্রিটিশ মন্ত্রী, এমপিদের গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের অকুণ্ঠ প্রশংসার মধ্য দিয়ে লন্ডন মিশনে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে।
আজ ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লন্ডস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে গত শুক্রবার এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান ও কূটনৈতিক সম্বর্ধনা আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপনে নয় মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু করেছে।
এই বিশেষ ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠান ও কূটনৈতিক সম্বর্ধনায় অংশ নিয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রী, এমপি, বিরোধীদলীয় নেতা, হাউজ অব লর্ডসের সদস্য, লন্ডনের মেয়র এবং ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলসের বিশিষ্ট সংসদ সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন।
যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এবং ব্রিটিশ কমনওয়েলথ, ফরেন ও উন্নয়ন অফিসের (এফসিডিও) মিনিস্টার অব স্টেট লর্ড তারিক আহমেদ, লন্ডনের মেয়র সাদিক খান, লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার এবং চেয়ার অ্যাঞ্জেলা রায়নার এমপি, হাউজ অব কমন্সের বিদেশ বিষয়ক বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান টম টিউজেনহাট এমপি, কনজারবেটিভ পার্টির ভাইস-চেয়ার মিস নিকি আইকেন এমপি, কনজারবেটিভ পার্টির আন্তর্জাতিক এম্বাসেডর লর্ড হান্নান, বাংলাদেশ বিষয়ক যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় সংসদীয় দলের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য বিষয়ক দূত রুশনারা আলী এমপি, আপসানা বেগম এমপি, সারা বয়াক এমএসপি এবং আইএমও-এর সেক্রেটারি জেনারেল কিটাক লিম বক্তব্য রাখেন।
বিরোধী দলীয় নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান কীয়ার স্টারমার এমপি এবং আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কোভনি বিশেষ বার্তায় বঙ্গবন্ধুসহ একাত্তরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তি উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট সদস্য সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ও নঈম উদ্দিন রিয়াজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসান এমবিই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পঞ্চাশ বছর পূর্বে একাত্তরের এই দিনে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।’
হাইকমিশনার বলেন ‘বিগত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসেছে এবং বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত বার বছরে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি অর্জন করেছে।’
তিনি একাত্তরের যুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্য সরকার, জনগণ, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এবং আইরিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ শুভেচ্ছা বাণী দেয়ার জন্য ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, প্রিন্স চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের জনগণ এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশিসহ বিশ্বজুড়ে সকল বাংলাদেশি জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে লর্ড তারিক আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে দৃঢ় অংশীদারিত্ব এবং গভীর বন্ধুত্বের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, গত পাঁচ দশক দুই দেশ তারই সুফল পাচ্ছে।’
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও অসামান্য সামাজিত উন্নয়ের প্রশংসা করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি যুক্তরাজ্য সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
কনজারবেটিভ পার্টির চেয়াম্যান আমন্ডা মিলিং-এর প্রতিনিধি হিসেবে পার্টির ভাইস-চেয়ার মিস নিকি আইকেন এমপি বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু যুক্তরাজ্যের সাথে যে বন্ধন প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তা ব্রেক্সিট এবং কোভিড পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অব্যাহত থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানিয়ে লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার এবং চেয়ার অ্যাঞ্জেলা রায়নার এমপি আগামী পঞ্চাশ বছর এবং তার পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রুশনারা আলী এমপি বাংলাদেশের সাথে তার পারিবারিক সর্ম্পকের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা বিশ্বব্যাপী ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচয় সমুন্নত রাখতে সবসময় অনুপ্রাণিত করবে।’
অনুষ্ঠানে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেয়া প্রিন্স চার্লস ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিশেষ শুভেচ্ছা বাণীর ভিডিও এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের ওপর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের শহীদদের নিবেদন করে বিশেষ সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট গায়িকা রুনা লায়লা, শাকিলা জাফর, ফজলু বারী বাবু, অমিত গুপ্ত এবং গৌরী চৌধুরী।
বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শম্পা রেজা প্রখ্যাত কবি শামসুর রাহমানের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। সাদিয়া ইসলাম মৌ ও তার দল এবং সনিয়া ও তার দল নৃত্য পরিবেশন করেন। গৌরী চৌধুরীর পরিচালনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূতি উপলক্ষে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পঞ্চাশজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশের শিশু বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসীরা এ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে জাতির পিতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠান শেষে হাইকমিশনার মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের নিয়ে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পঞ্চাশ বছরপূর্তি’ লেখা একটি কেক কাটেন। এর আগে সকালে হাইকমিশনার মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের নিয়ে হাই কমিশন ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করে শুনানো হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর শহীদ পরিবার ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ূ ও সুস্বাস্থ্য এবং বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নতি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat