×
ব্রেকিং নিউজ :
শ্রীলংকার ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু তাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ‘মাদক পাচার ও মাদকের অপব্যবহার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী প্রবীণ রাজনীতিবিদ আব্দুস সামাদ আজাদের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী সর্বজনীন পেনশন নিয়ে ভোলার চরফ্যাশনে অবহিতকরণ সভা রাঙ্গামাটির সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জন কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ৬ হাজার কৃষকের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতা ২০২৪
  • প্রকাশিত : ২০২১-১০-১৯
  • ২৭৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বন্ধ করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে এদেশে কাউকে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তার ছোট ভাই রাসেলের মতো আর কোন শিশুকে যাতে হত্যার শিকার হতে না হয়, সেজন্য তাঁর সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এদেশে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করবে। আমাদের সংবিধানেও তা বলা আছে। ইসলামেও সে কথাই বলা হয়েছে। মহানবী (স.) বলেছেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। সুতরাং আমরা চাই ধর্ম নিয়ে যেন কেউ বাড়াবাড়ি না করে। এ দেশে সবাই শান্তিতে বসবাস করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভেনিউস্থ দলের কেন্দ্রিয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় ভার্চুয়ালি সভায় অংশগ্রহণ করেন।
জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের পাশাপাশি গৃহহীণকে ঘর করে দেয়া তাঁর সরকারের লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশে একটি শিশুর মেধা ও জ্ঞান যাতে যথাযথভাবে বিকষিত হবার সুযোগ পায় এবং সে বাংলাদেশকে যেন সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কারণ এত রক্ত ক্ষয় এত কিছু বাংলাদেশে ঘটে গেছে। কাজেই এ ঘরনের ঘটনা আর যেন না ঘটে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী এদিন মন্ত্রি পরিষদের নিয়মিত বৈঠকেও কুমিল্লায় গুজবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পূজা মন্ডপে হামলা ও গোলাযোগ সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান।
দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আলোচনা সভায় প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন।
আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজীত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যরিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা মেহের আফরোজ চুমকি এবং মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কোচি।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড.আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর বাবার আদর্শ নিয়েই এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এদেশে আর শিশুরা যাতে কোনরকম নির্মমতার শিকার না হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের এখনও মাঝে মাঝে সেই নির্মমতা আমরা দেখি এবং এটা যেন আর না হয়। কারণ দেখেছি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কিভাবে মানুষগুলোকে হত্যা করা হয়েছে, শিশুদের পর্যন্ত।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বিরোধি দলে থাকার সময় তার অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয়েছে মানুষজন। বাবা দেখেছে তার চোখের সামনে কিভাবে জ্যান্ত সন্তান আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে। সে রকম নিষ্ঠুর ঘটনাওতো দেশে ঘটেছে এবং এটাই হচ্ছে সবথেকে দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এইটুকুই চাইব এখানে মানবতার প্রশ্ন যারা তোলে তারা যেন এই ঘটনাগুলো ভাল ভাবে দেখে যে, বাংলাদেশে কি ঘটতো। কিন্তু আমরা সরকারে আসার পর আমাদের প্রচেষ্টা কোন শিশু রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে না টোকাই থাকবেনা। তাদের যেন একটা ঠিকানা থাকে তারা যেন একটু ভালভাবে বসবাস করতে পারে।
জাতির পিতার কনিষ্ঠ পুত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সাথে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি তখন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখনও চেষ্টা করেছি, এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে এই দেশের শিশুরা তাদের লেখাপড়া, তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, তারা যেন নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে। আজকে যেমন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ, সেটা তৈরি করার জন্য তাদের প্রস্তুত করা, তাদের ট্রেনিং দেওয়া, সব রকম ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তিনি বলেন, শিশুর নিরাপত্তা, শিশু অধিকার আইন তো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে করে দিয়ে গেছেন। প্রাথমিক শিক্ষাটাকে অবৈতনিক, বাধ্যতামূলক করে দিয়ে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দেশে খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই হত্যাকান্ডের বিচার করা হবে না বলে আইন করা হলো এদেশে। বাবা-মা-ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার চাইতে পারিনি, আমাকে একটি মামলাও করতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, বিশ্বে যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, তখন তারা কোথায় ছিলেন?
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর খুনীদের দায়মুক্তি দিতে শুধু আইন করা নয়, খুনীদের রাষ্ট্রদূত বানিয়ে পুরস্কৃত করা, প্রহসনের নির্বাচনে খুনীদের এনে সংসদে বসানোর ঘটনা ঘটেছে। জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া এসব কাজ করেছে।
সাবেক সেনা শাসক জিয়াউর রহমানের সময় সেনাবাহিনী নাকি অনেক ‘ডিসিপ্লিনড’ ছিল এবং ‘শক্তিশালী’ ছিল বলে কতিপয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সে সময় ১৯টি ক্যু সংঘটিত হওয়া, সেই ক্যু’কে কেন্দ্র করে হাজার হাজার সামরিক বাহিনীর অফিসার হত্যার অভিযোগ উত্থাপন করেন।
তিনি বলেন, সেখানে আমার প্রশ্ন ’৭৫ থেকে ’৮১ এই সময়ের মধ্যে ১৯টি ক্যু যখন হয় একটি দেশে সেখানে একটি দেশের সেনাবাহিনী ‘শক্তিশালী’ ও ‘ডিসিপ্লিনড’ থাকে এ দাবি করে কোন মুখে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর একজন অফিসার হয়েও সে জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে যে জড়িত শুধু তাই নয়, সেতো হাজার সেনা ও বিমান বাহিনীর অফিসার হত্যা করেছে। ’৭৫ এর পর দিনের পর দিন আওয়ামী লীগের নেতাদের কারাগারে বন্দি করে অমানবিক অত্যাচার করেছে। যা পরবর্তীতেও অব্যাহত রেখেছে। কাজেই তাদেও মধ্যে মানবতাবোধ বলে কিছুই ছিলনা, এখনও নাই।
প্রধানমন্ত্রী এ সম্পর্কে বলেন, জাতির পিতার হত্যাকান্ডের খুনীদের বিচারের পর যখন অনেকের ফাঁসির রায় হলো তখন ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারার কারণে খালেদা জিয়া সেই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। এমনকি খালেদা জিয়া তাদের ডেকে এনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকরিতে পুণর্বাসন করে। এমনকি প্রমোশনও দেয়। খায়রুজ্জামানকে প্রমোশন দিয়ে মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়ে দেয়। খুনী পাশাকে মৃত্যুর পর প্রমোশন দেয়া হয়।
খালেদা জিয়ার খুনীদের প্রতি এই পক্ষপাতিত্বের কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কারণ খুনী মোশতাকের সঙ্গে জিয়াউর রহমান সম্পূর্ণভাবে এই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল। ছোট ভাই শেখ রাসেলকে সর্বশেষ হত্যা করা হয়। বলা হয়েছিল, ওই ছোট্ট শিশুটিও যেন না বাঁচে। এই নির্দেশটা কে দিয়েছিল? কারা দিয়েছিল? সব শেষে সব লাশ মাড়িয়ে শেখ রাসেলকে হত্যা করা হলো, সবচেয়ে এটাই বড় কষ্টের।
প্রধানমন্ত্রী ম্মৃতি রোমন্থনে বলেন, আমাদের বড় চার ভাই-বোনেরও শেখ রাসেল ছিল অত্যন্ত আদরের, কিন্তু বাবার ¯েœহ থেকে বঞ্চিত ছিল।
বঙ্গবন্ধু দিনের পর দিন কারাগারে বন্দী অবস্থায় অবুঝ শিশু রাসেলের মনের কষ্টের কথা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বড়বোন শেখ হাসিনা বলেন, কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু যখন মুক্তি পেতেন, তখন রাসেল কোনভাবেই বাবাকে চোখের আড়াল করতে চাইতো না। খেলা-ধুলা বা পড়ার টেবিল থেকে কয়েক মিনিট পর পরই বাবার কাছে ছুটে আসতো। মনে তার একটা ভয় ছিল, বাবা আছে কি না। কারাগারে গেলেও বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আসতে চাইতো। বাড়িতে ফিরে সারারাত ঘুমাতো না, কাঁদতো। এমন কষ্ট নিয়েই বড় হচ্ছিল আমার ছোট ভাই শেখ রাসেল। তিনি রাসেল সম্পর্কে আরও বলেন, রাসেল ছোটবেলা থেকে সহজ-সরল ছিল। তার কোনো দাবি ছিল না। তাঁর স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে সেনা অফিসার হবে। সে কারণে ছোটবেলা থেকেই টুঙ্গিপাড়ায় শিশুদের নিয়ে প্যারেড করতো। প্যারেড করার পর তাদের পুরস্কার হিসেবে এক টাকা করে দিতো, জামা-কাপড়ও কিনে দিতো।
শহীদ শেখ রাসেলের দেশবাসীর দোয়া কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ রাসেল নেই। কিন্ত এ দেশের হাজার হাজার শিশু যেন নিরাপত্তা পায়। তারা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। তারা যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।
‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার’ সুকান্তের এই উদ্ধৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বকে পারবো কিনা জানি না- তবে এ দেশকে যেন শিশুদের জন্য নিরাপদ করতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করছি। আপনারা সবাই শেখ রাসেলের জন্য দোয়া করবেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর 

 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূজা মন্ডপে সাম্প্রতিক হামলা এবং হিন্দু স্প্রদায়ের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। 
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত তদন্ত শেষ করে এ ঘটনার পেছনে জড়িতদের সনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। 
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি এই বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সদস্যবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 
মন্ত্রি পরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যতশিগগির সম্ভব এ ঘটনার তদন্ত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। 
কোন তুচ্ছ ঘটনায় কেউ যাতে তাৎক্ষণিক বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া না দেখায়, এ জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতিও তিনি আহ্বান জানান। 
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় খুব শিগগির কিছু খুঁজে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ধর্ম অবমাননার বা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করতে ইসলাম কোন মুসলমানকে ক্ষমতা দেয়নি। ইসলামের কাছে এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। 
তিনি বলেন, বিক্ষুদ্ধরা প্রতিবাদ জানাতে পারে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানাতে পারে। 
তিনি বলেন, কোরানের যদি অবমাননা হয়েও থাকে, তথাপি কোরান অন্য ধর্মের লোকদের ওপর হামলা চালানোর কর্র্তৃত্ব কাউকে দেয়নি। 
 

সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বদ্ধপরিকর : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে বাংলাদেশকে বিশ্ব সভায় একটি উন্নত ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর। আগামীকাল ২০ অক্টোবর ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে  তিনি এ কথা বলেন। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান’ উপলক্ষ্যে ‘প্রজ্ঞালোক’ স্মরণিকা প্রকাশ হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের শান্তির বাণী মানবজাতির কল্যাণ ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তাঁর আদর্শ ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল ও মানবিকতায় পরিপূর্ণ। বুদ্ধের অহিংস বাণী ও জীবপ্রেম আজও বিশ্বব্যাপী সমভাবে সমাদৃত।
শেখ হাসিনা বলেন, শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে কঠিন চীবর দানোৎসব সকলের মধ্যে গড়ে তোলে ঐক্য, সংহতি ও সম্প্রীতি। ত্যাগ, সংযম, নিয়মানুবর্তিতা আর কঠোর ধ্যান সাধনার মাধ্যমে উদযাপিত ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান’ ভক্তদের বুদ্ধের প্রকৃত অনুসারি হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘ধর্ম যাঁর যাঁর, উৎসব সবার’ এ আপ্তবাক্য ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে বাংলাদেশকে বিশ্ব সভায় একটি উন্নত ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গৌতম বুদ্ধের অহিংসার বাণী ধারণ করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ একযোগে কাজ করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।”
তিনি ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান’ উৎসবের সার্বিক সফলতা কামনা করেন।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat