×
ব্রেকিং নিউজ :
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-২১
  • ৪৭০ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
পথে ঘাটে নারীকে সুরক্ষা দেবে কারাতে শিক্ষা
নিজস্ব প্রতিনিধি:-  পথেঘাটে হয়রানির শিকার মেয়েরা। দুর্বল ভেবেই কি না, গণপরিবহন এমনকি মার্কেটেও কটূক্তি, আক্রমণ চলছে দেদারসে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় নারীর জন্য প্রয়োজন সাহস ও আত্মরক্ষার কৌশল জ্ঞান। নারীরা এতদিন আত্মরক্ষার কথা না ভাবলেও ইদানীং কেউ কেউ ভাবছেন প্রতিরোধের কথা। এ ক্ষেত্রে কার্যকর কৌশল হতে পারে মার্শাল আর্ট বা কারাতে প্রশিক্ষণ। যেখানে প্রশিক্ষণ চলে, দিনে দিনে সেখানে মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে। সকাল হলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বা জাতীয় সংসদের আশপাশে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় কারাতে, জুডো, তায়াকান্ডো প্রশিক্ষণ নিচ্ছে নারীরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিনামূল্যে নারীদের আত্মরক্ষাও এই শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। জাপানে শৈশবে এই কারাতে প্রশিক্ষণ নেয়া বাধ্যতামূলক। স্কুলে, স্কুলেই আছে সে ব্যবস্থা। প্রশিক্ষক বা যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা বলছেন, এই শিক্ষা থাকলে বখাটেদের হয়রানির ক্ষেত্রে অসহায় পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না মেয়েদের। নিজেরাই নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবে। পরিচিত কারাতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘খিউকুশিন বাংলাদেশ’ এর গুলশান শাখা প্রধান আরিফুর রহমানের সঙ্গে কথা হলো। তিনি বলেন, ‘নারীদের জন্য আত্মরক্ষার কৌশল জানা অত্যন্ত জরুরি। তবে বাধা আসে সমাজ থেকে। নারীদের মধ্যে কারাতে শেখার আগ্রহ থাকলেও পরিবারের সহায়তা থাকে না। নিজেদের জন্যে হলেও নারীদের এই প্রতিকূলতা কাটাতে হবে।’ আরিফ আরও বলেন,  ‘আমার প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষের কারাতে শিক্ষা একইসঙ্গে নেওয়া হয় বলে অনেক মেয়ে ও তার পরিবার কারাতে শিখাতে রাজি হয় না। তারা মেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্যে আলাদা নারী প্রশিক্ষক চান। আজকের দিনে নারীরা যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তার ৯৯ শতাংশই পুরুষ সংঘটিত। তাহলে আত্মরক্ষার কৌশলটিও পুরুষদের থেকে জেনে রাখা ভাল নয় কি?’ চার মাসের সেশন ও ১০ সেশনে ব্ল্যাকবেল্ট উপযোগী প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা রয়েছে খিউকুশিন বাংলাদেশে। নারীদের নিয়ে এ পর্যন্ত ছয়টি কর্মসূচি করেছেন তারা। সামনে আর কাজ করবেন বলে জানান গুলশান শাখা প্রধান। কথা হয় কারাতে প্রশিক্ষণে সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জনকারী ব্ল্যাকবেল্ট ধারী নারী হিবা সারাফুদ্দিনের সঙ্গেও। তিনি জানান, এই প্রশিক্ষণ থাকলে মেয়েরা বিরুদ্ধ পরিবেশে অনেক আত্মবিশ্বাসী থাকবেন এবং প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বের হয়ে আসতে পারবেন। বর্তমানে অনেক মেয়েরাই কারাতে শিখতে আসছেন জানিয়ে হিবা জানান, প্রতিটি ব্যাচেই মেয়েদের সংখ্যা এখন আগের অনেক বেশি। কোথায় শিখবেন? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে জুড-কারাটে সেন্টার। নারী পুরুষ উভয়ে মিলেমিশে এই সেন্টারে প্রশিক্ষণ নেয়। এই সেন্টার থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচির ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকার বনশ্রী এলাকায় ওসমানী স্পোর্টস স্কুলে সব বয়সী নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আত্মরক্ষা নিয়ে। এছাড়া কাটাবনে বাংলাদেশ কারাটে-ডু, কলাবাগানের কারাটে ক্লাব, ইস্কাটনে ইন্টারন্যশনাল কারাটে ইউনিয়ন, ধানমন্ডি রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে কারাটে শিক্ষা দেয়া হয়। আত্মরক্ষা বিষয়ে জাতিসংঘের ইউএন উইমেনের সহযোগিতায় ‘সেফ স্কুল সেফ কমিউনিটি’ নামে একটি প্রজেক্ট নামিয়েছিল বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ। ২০১৫ ও ২০১৬ সাল জুড়ে সেই প্রকল্প চলছে। এই কাজের আওতায় দেশের চারটি জেলা নির্ধারণ করে সেখানকার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে মেয়েদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তিন থেকে ছয় মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটি চলেছিল। বর্তমানে স্বল্প পরিসরে ময়মনসিংহ জেলায় এই কার্যক্রম চালু আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat